সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৬৪০ টাকা হারে এবারের ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার আগে আসুন জেনে নিই ফিতরা কি ? ফিতরা একটি আরবি শব্দ যার অর্থ হচ্ছে দান করা।ইসলামে এটি সদকাতুল ফিতর নামে পরিচিত।
যে সকল বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনাফিতরা কত টাকা ২০২৩
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
সদকাতুল ফিতরার বিধান
ফিতরা কিভাবে আদায় করবেন
ফফিতরার পরিমান কত
ফিতরা কখন দিতে হবে
ফিতরা অর্থ কি | ফেতরা কি
ফিতরা একটি আরবি শব্দ । রোজাদার বেক্তি ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব দুঃখীদের মাঝে যে অর্থ দান করে তাকে সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা বলে। এই অর্থ গরিব দুঃখীদের হক। তাদের হক পুরন করা প্রত্যেক রোজাদার ব্যক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইদ সবার জন্য আনন্দ বয়ে আনে। তাদের ইদকে আমরা আনন্দঘন করতে পারি আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে। আমাদের প্রিয় নবি হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) ফিতরা ফরজ করেছেন।
১৯৪৪ হিজরি সনের সাদাকাতুল ফিতর এর হার জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২৬৪০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ (২ এপ্রিল, রবিবার) সকাল ১১ টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহল আমিন।
সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ইসলামী শরীয়াহ মতে, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোন একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়। গম বা আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে অর্ধ সা' বা ১ কেজি ৬শ ৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১১৫ (একশত পনের) টাকা প্রদান করতে হবে।
যব দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ও কেজি ৩ শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৩৯৬ (তিনশ ছিয়ানব্বই) টাকা, কিসমিস দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি ৩শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১,৬৫০ (এক হাজার ছয়শত পঞ্চাশ) টাকা, খেজুর দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি ৩ শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১,১৮০ (এক হাজার ন্যাশ আশি) টাকা ও পনির দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি এশা গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২,৬৪০ (দুই হাজার ছয়শত চল্লিশ) টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।
ফিতরা কত টাকা ২০২৩
- ২০২৩ সালের এবারের রোজার ঈদের ফিতরার টাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২৬৫০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের সকল বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা, যব, খেজুর, কিসমিস ও পনিরের বাজার মূল্যের ভিত্তিতে এই ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার যার নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী উপযুক্ত পণ্যগুলোর যে কোন একটি পণ্য বা এর বাজার মূল্য দ্বারা সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতে পারবেন। উল্লেখ্য, উপর্যুক্ত পণ্যসমূহের স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্য রয়েছে। তদনুযায়ী স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হবে।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নেন্স গভর্নর মাওলানা মুহাম্মদ কাফিলুদ্দীন সরকার, মি উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, জমিয়া শরীয়াহ এর ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি নজরুল ইসলান, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মুহাম্মদ সान, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোঃ আনিছুর রহমান সরকার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস ড. মুফতি ওয়ালীযুর রহমান খান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ও মাওলানা মুহাম্মাদ আৰু সালেহ পাটোয়ারী, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের ইমাম উপস্থিত ছিলেন।
ফিতরা কত টাকা
সহিহ বুখারি(বুখারি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২০৪,২০৫) অনুযায়ী
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন , মহানবি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর সময় আমরা এক ছা পরিমান সদকা দিতাম। সদকাতুল ফিতরার বিধান অনুযায়ী এক ছা পরিমান প্রায় সাড়ে তিন কেজি ।তিনি আরো বলেন তখন আমাদের খাদ্য ছিল: যব, কিশমিশ, পনির ও খেজুর।সদকাতুল ফিতরা আদায় করতাম এক ছা পরিমান খাদ্যবস্তু বা এক ছা যব বা এক ছা বা এক ছা পনির অথবা এক ছা কিশমিশ।
সাহাবা (রাঃ) রা খেজুর দিয়েই সদকাতুল ফিতরা আদায় করতেন। আর খেজুর দিয়ে করাই উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন , তা-ই উত্তম, দাতার কাছে যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি।তাই বেশি মূল্যের খেজুর বা চাল দিয়ে সদকাতুল ফিতরা আদায় করা উচিত বা এঁর সমপরিমান অর্থ দিয়ে যা গরিব দুঃখীদের জন্য বেশি উপকার হয়।
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব।অর্থাৎ পালন করা জরুরি। যেসমস্ত দরিদ্র মানুষ যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত তারা সদকাতুল ফিতরারও উপযুক্ত।অতএব সমাজের নিম্নশ্রেনির মানুষ, দরিদ্র আত্মীয় স্বজন এই ফিতরা পাউয়ার উপযোগী।
সদকাতুল ফিতরার বিধান
সদকাতুল ফিতর হল ১ মাস সিয়াম সাধনার পর যদি কোন ভুল ত্রুতি হয় তা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি উপায়। ইদের দিন সকাল বেলা যে নির্ধারিত সদকা আদায় করা হয় তাই হল সদকাতুল ফিতর। এই সদকাতুল ফিতরার বিধান হল ইদের নামাজের আগেই ফিতরার হক আদায় করা তবে যদি কেও অক্ষম হয় তবে পরেও আদায় করা যাবে।
ফিতরা কাদের দেওয়া যাবে
- নিজ পরিবার-পরিজনের মধ্যে যারা গরিব-অসহায়, ফিতরার হকদার তারাই সবার আগে। তবে একজনকে ন্যূনতম পূর্ণ একটি ফিতরা দেয়া উত্তম। প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে কয়েক জনের ফিতরাও একজনকে দেয়া যেতে পারে। এতে গরিব-অসহায় ব্যক্তির উপকার হয়। ওয়াজিব হলে নবজাতকের ফিতরার টাকাও বাবাকে পরিশোধ করতে হবে।