বিমান বাহিনী জাদুঘর যার পূর্ণ নাম বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর (Bangladesh Air Force Museum). ঐতিহাসিক এই জাদুঘরটি ২০১৪ সালে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তখন থেকে এটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এবং জনপ্রিয় একটি দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (Bangladesh Air Force Museum) জাদুঘর রাজধানী ঢাকার বেগম রোকেয়া সরণি, আগারগাও তালতলা তে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮ঃ০০টা পর্যন্ত এই জাদুধরটি খোলা রাখা হয় সকল দেশি ও বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য। মাত্র ৫০ টাকা প্রবেশ মূল্য হওয়ায় বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড় লক্ষ করা যায় এখানে। ছোট- বড়, শিশু কিশোর, যুবক যুবতি থেকে শুরু করে বৃদ্ধ ও বয়স্ক নারি পুরুষের দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয় সময় এর সাথে সাথে।
এর পাশেই ঢাকা মেট্রোরেল ষ্টেশন( আগারগাও ষ্টেশন) হওয়াতে যে কারো মন কেড়ে নেয় এর ভেতরের মনোরম দৃশ্য। বিশেস করে এখানে সাজিয়ে রাখা সারি সারি যুদ্ধ বিমান ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের হেলিকাপ্টার সমুহ সবার নজর কেড়ে নিবে। এখানে বেশ কয়েকটি বিমান রাইডস রয়েছে যেখানে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে উঠতে পারবেন।
বিমান বাহিনী জাদুঘর সাপ্তাহিক বন্ধ
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে,;বিমান বাহিনী জাদুঘর সাপ্তাহিক বন্ধ কবে ? উত্তরঃবিমান বাহিনী জাদুঘর সাপ্তাহিক বন্ধ হচ্ছে রবিবার। প্রতি রবিবার (Sunday) বন্ধ থাকলেও, সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২ঃ০০টা থেকে রাত ৮ঃ০০টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০ঃ০০টা থেকে রাত ৮ঃ০০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যদিও রমজানের সময় এর সময়সূচীতে পরিবর্তন ঘটতে পারে।
বিমান বাহিনী জাদুঘর টিকেট মূল্য
- বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর টিকেট মূল্য সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০টাকা। তবে ২ বছরের নিচের শিশুদের টিকিট এর প্রয়োজন হবে না। এছাড়া প্রবেশ পরবর্তী সকল রাইডস এর জন্য ৩০-৫০টাকা ধার্য করা হয়েছে।
- বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর
- শিশু মেলা
- জিয়া উদ্যান/ চন্দ্রিমা উদ্যান
বিমান বাহিনী জাদুঘর খোলার সময়সূচী ২০২২
অনেকেই এখানে ঘুরতে এসে হতাস হতেন কেননা তারা জানতেন না যে করোনাকালীন লকডাউন এ জাদুঘর বন্ধ ছিল। তাই এখনো অনেকে প্রশ্ন করেন যে,বিমান বাহিনী জাদুঘর কি খোলা ? উত্তরঃ হ্যাঁ, বিমান বাহিনী জাদুঘর ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে (এখন ২০২৩) খোলা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত জাদুঘরটি খোলা রাখা হয়। প্রবেশ মূল্য মাত্র ৫০টাকা।
শনিবার | সকাল ১০ঃ০০টা - রাত ৮ঃ০০টা |
রবিবার | সাপ্তাহিক বন্ধের দিন |
সোমবার | দুপুর ২ঃ০০টা - রাত ৮ঃ০০টা |
মঙ্গলবার | দুপুর ২ঃ০০টা - রাত ৮ঃ০০টা |
বুধবার | দুপুর ২ঃ০০টা - রাত ৮ঃ০০টা |
বৃহস্পতিবার | দুপুর ২ঃ০০টা - রাত ৮ঃ০০টা |
শুক্রবার | সকাল ১০ঃ০০টা - রাত ৮ঃ০০টা |
ছুটির দিন | খোলা থাকে। |
বিমান বাহিনী জাদুঘর কিভাবে যাবো
রাজধানী ঢাকার যেকোনো প্রান্ত হতে বাসে, মোটর সাইকেল, সিএনজি, প্রাইভেট কার কিংবা মেট্রো রেল এ আসা যাবে। যেকোনো প্রান্ত থেকে আগারগাও তালতলা আসতে হবে এখান থেকে পূর্ব দিকে তাকালেই রাস্তার অপর পাশে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর অবস্থিত।
মিরপুর হতে | মিরপুর হতে বেশ কয়েকটি বাস ঢাকা শিশু পার্ক গেট এর সামনে দিয়ে যায়। তাদের মধ্যে শিকড়, হিমাচল,বিহঙ্গ, দিশারী, ট্রান্স সিল্ভা সহ গুলিস্তান অভিমুখী সকল বাস। মেট্রো রেল এ ১০ নম্বর থেকে আগারগাও ষ্টেশনে নামতে হবে। |
গাবতলি/সাভার | সরাসরি কোন বাস না থাকলেও প্রথমে যেকোনো বাসে মিরপুর ১০ আসতে পারেন। অথবা বৈশাখী পরিবহনে আগারগাও বাস স্টপে নামতে হবে। সেখান থেকে উত্তর দিকে পায়ে হেটে ২ মিনিট। |
রামপুরা/বাড্ডা | এখান থেকে সরাসরি আসতে হলে আলিফ বাসে আসতে হবে এবং নামতে হবে আগারগাও বাস ষ্টেশন। |
নারায়ণগঞ্জ | নারায়ণগঞ্জ হতে সরাসরি আসতে হলে হিমাচল পরিবহন এ করে সরাসরি আসা যাবে।তবে মেঘলা পরিবহনে করে শাহবাগ নেমে মিরপুর গামি যেকোনো বাসে আসা যাবে আগারগাও। |
উত্তরা/এয়ারপোর্ট | এখান থেকে সরাসরি আসতে কষ্ট হতে পারে। তবে উত্তরা থেকে মেট্রো রেলে করে আসতে ১৫ মিনিট সময় লাগবে। স্টেশনের সাথেই জাদুঘর। এছাড়া তেতুলিয়া বাসে সরাসরি এবং প্রজাপ্রতি/ পরিস্থান বাসে মিরপুর ১০ নেমে আগারগাও গামি সকল বাসে করে |
ফার্মগেট | এখান থেকে শিকড়, হিমাচল,বিহঙ্গ সহ মিরপুর ১০ অভিমুখি সকল বাস |
মোহাম্মদপুর | এখান থেকে মিরপুর মেট্রো করে আসাদগেট, সংসদ ভবনের সানে দিয়ে সরাসরি আসা যাবে অথবা আলিফ পরিবহনে করে আগারগাও আসতে হবে। |
নিউ মার্কেট/ ধানমন্ডি | সরাসরি বাস হল মিরপুর মেট্রো |
মালিবাগ/কমলাপুর | এখান থেকে আসার সবচেয়ে সহজ রাস্তা হল কমলাপুর মেট্রো রেল ষ্টেশন থেকে সরাসরি আগারগাও। বাসে করে সরাসরি আয়াত বাস চলাচল করে। |
এখানের উল্লেখযোগ্য রাইডস সমুহ
বলাকা | এটি বাংলাদেশের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান। এখানে উঠতে ৩০ টাকা জনপ্রতি। |
গ্লাইডার | ১৯৮২ সালে এই যুদ্ধ বিমানটি জার্মানি বাংলাদেশকে উফার হিসাবে দেয়। |
হান্টার বিমান | ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারত এই বিমানটি ইউজ করেছিলেন। |
লেজার ভিশন | ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য এখানে রয়েছে একটি ল্যাজার পয়েন্ট, যেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করতে পারে। |
বুট বা নৌকা | এখানে ঘণ্টা প্রতি বুট ভারা নিতে পারবেন। বিকাল বেলা এই নৌকা রাইডস অনেক চমৎকার ফ্রেশনেস দিবে। |
চুকচুক ট্রেন | এখানে অবস্থিত লেক এর চারপাশে রয়েছে ট্রেন লাইন। পরিবার সহ লেকটি ঘুরে দেখতে পারবেন ট্রেনে করে। |
মিনি ট্রেন | এটি ছোট বাচ্চাদের জন্য নিরধারিত ট্রেন। প্রবেশমূল্য মাত্র ৩০টাকা। |
নাগরদোলা | এখানে রয়েছে সু বিশাল নাগরদোলা। নির্দিষ্ট মূল্যে টিকেট ক্রয় করে উপভোগ করা যাবে। |
হেলিকাপ্টার ভিউ | নিজের চোখে দেখতে পারবেন কিভাবে ছোট বিমান বা হেলিকাটারগুলো উঠা নামা করে। |
এছারাও রয়েছেঃ
- হাতি, যার পেটে বাচ্চারা উঠতে পারবে।
- ড্রাগন, যার উপর বাচ্চারা উঠতে পারবে।
- বক, উট, ক্যাঙ্গারু, বাজপাখি, বাঘ, সিংহ সহ ছোট বড় প্রায় ২০টি প্রানির সিমেন্ট আকৃতি।বলতে পারেন ছোটোখাটো একটি মিনি চিড়িয়াখানা এটি।
কোথায় খাবেন
জাদুঘরটির ভিতরে বেশ কিছু দোকান রয়েছে, তবে এখানে দাম অনেক বেশি। এখানে না খেতে চাইলে গেট থেকে বের হয়ে আম্নে তাকালেই দেখতে পারবেন সারি সারি ফাস্ট ফুড দোকান।
তো আর দেরি কেন, আজই আপনার পরিবারের ছোট বড় সবাইকে নিয়ে চলে আসুন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘরে। আর জানুন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে এবং মুক্তিজুদ্ধে ব্যাবহার করা হয়েছে এমন বেশ কিছু যুদ্ধ বিমান সম্পর্কে।